উদারতার এক অনন্য বঙ্গবন্ধুস্বাধীন বাংলাদেশের স্বপতি, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য যাঁরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে বিপথগামী সেনাদের হাতে নিহত হয়েছিলেন তাঁদের সকলের প্রতি…
উদারতার এক অনন্য বঙ্গবন্ধু
উদারতার এক অনন্য বঙ্গবন্ধু
স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপতি, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য যাঁরা
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে বিপথগামী সেনাদের হাতে নিহত হয়েছিলেন তাঁদের সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ।
আমার কেন যেন মনে হয়, জাতি হিসেবে আমরা একটি অকৃতজ্ঞ জাতি,কারণ
যিনি আমাদের স্বাধীন দেশের জন্য সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিলেন,
তাঁকেই আমরা হত্যা করেছি। শুধু কি তাই? তাঁর পরিবারের সকল সদস্য, এমনকি শিশুপূত্র রাসেলও বাদ যায় নি মানুষ নামক কিছু হায়েনাদের হিংস্রতা থেকে।
পৃথীবিতে এমন অকৃতজ্ঞ জাতি আছে কিনা, আমার খুব বেশি মনে হয়না।স্বাধীন বাংলাদেশের দিনপঞ্জি বা ক্যালেন্ডারকে তারা করেছে কলঙ্কিত।
এতেই কি তারা ক্ষ্যান্ত হয়েছে, হয় নাই।আবারও তারা শুরু করে কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মতো পৈশাচিক কাজ।
মানুষের নিরাপদ জায়গা কারাগার। সেখানে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসকে ভুলুন্ঠিত করার জন্য উঠে পরে লেগেছিল।
দিনপঞ্জিকে আবারো তারা কলঙ্কিত করলো এবং সৃষ্টি করে গেলো কালো একটি অধ্যায়।
তাহলে কি বাঙালি জাতি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলো? কারণ তারা যদি স্বাধীনতা মন থেকে চাইতেন,
তবে স্বাধীনতার অগ্রনায়ক বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করবেন কেনো? পাগল আর শিশু ছাড়া সবাই নিজের ভাল-মন্দ বোঝে।
দীর্ঘ ২৩ বছরের পাকিস্তানি শাসনামলের যে ইতিহাস সেখানকার যে অন্যায়,অত্যাচার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর,
তা থেকে মনে হয় তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগনকে মানুষতো মনেই করতো না,বরং পশুর মতো আচরণ করতো।
এ অবস্থায়, পরাধীনতার গ্লানি থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করাই কি তাঁর জীবনের ভুল ছিলো? আমরা যারা দেশের সংগ্রামের ইতিহাস পড়েছি বা জানি,
সেখানে ১৯৫২,৫৪, ৬২,৬৬,৬৯,৭১,সমস্ত সংগ্রামে একজনের উপস্থিতি তিনি হলেন রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু।আমার মনে পড়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার
সম্পাদক নূহ-উল-আলম লেলিন সাহেবের একটি কথা।উনারা বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন তাঁর নিরাপত্তার জন্য এমনকি বিভিন্ন বিদেশি ব্যক্তিও।
বঙ্গবন্ধু তাদের কথার প্রেক্ষিতে বলেছিলেন,”আমাকে আবার কে মারবে?আমি দেশের জন্য এতোকিছু করলাম।” কি উদার আর মহান ও মহানুভবতা!
দেশবাসীর প্রতি কতটা আস্থা থাকলে মানুষ এমন কথা বলতে পারে।বঙ্গবন্ধু আমার আপনার মতো ক্ষমতালোভি ছিলেন না।
উনাকে পাকিস্তান থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিলো প্রধানমন্তী করার জন্য। উনি এসব গ্রহণ করেননি।
বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য জেলখানাকে উনার বাড়ি বানিয়েছিলেন।জেল থেকে মুক্তি দিয়েই আবার সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সবকিছু নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে,কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না,থাকা উচিৎ নয়।
আজকের কিছু যদু মদু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।তাদেরকে আমি বলবো হিংসা,পরশ্রীকাতরতার একটা জায়গা আছে। সেটা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কেনো থাকবে?
১৯৭১ সালে সাড়ে সাত কোটি মানুষ বঙ্গবন্ধুর সেই অমীয় বাণী শোনার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন শুধু মুক্তি লাভের আশায়।
আমি যখন খুব ছোট তখন বঙ্গবন্ধু সমপর্কে আমার নানা আমাকে বলেছিলেন।তখন থেকে আজ অবধি কেউ যদি বঙ্গবন্ধু সমপর্কে কটুক্তি করে বা শুনি আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়,অস্বস্তি লাগে ।
তাই যদু মদুদের বলতে ইচ্ছে হয়, না জেনে অযথা বঙ্গবন্ধু সমপর্কে বলতে আসবেন না।যারা বঙ্গবন্ধু সমপর্কে কটুক্তি করেন তাদের প্রতি আমার চরম ঘৃণা হয়।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে,”যারে দেখতে নারী তার চলন বাঁকা” রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে,মতানৈক্য অস্বাভাবিক নয়,তাই বলে বঙ্গবন্ধু সমপর্কে সেটা থাকতে পারে না,থাকা উচিৎ নয়।
অনেকেই বলতে পারেন যে,তবে কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে না?হ্যা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নোংড়ামি করা নয়।
সায়মা ইসলাম স্নিগ্ধা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সারা বাংলার সকল আপডেট খবর পেতে যুক্ত হোন আমাদের সাথে
আরো পড়ুন,