শাহজাহান ইসলাম লেলিন, শিক্ষানবিশ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক আগাম জাতের (সেভেন জাত) আলু তুলতে শুরু করছেন। ফলন একটু কম হলেও বাজারে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন এমনটাই আশা করছেন…
কিশোরগঞ্জে নতুন আলু কেজিতে ৬০ টাকা বিক্রি
শাহজাহান ইসলাম লেলিন, শিক্ষানবিশ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক আগাম জাতের (সেভেন জাত) আলু তুলতে শুরু করছেন। ফলন একটু কম হলেও বাজারে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন এমনটাই আশা করছেন ওই উপজেলার আলু চাষিরা। এই আলু ঢাকাসহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ছাড়াও বিভাগীয় শহর গুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে। নতুন আলু পেয়ে ভোক্তারা বেশ আগ্রহ সহকারে কিনাছেন। এ ছাড়া ঢাকা চট্রগ্রাম থেকে পাইকাররা নীলফামারী এসে গ্রামে গঞ্জে ঘুরে আলু
ক্রয় করে ট্রাক ভরে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলু চাষি আনোয়ারুল ইসলাম, কবির হোসেন বলেন আগাম সেভেন জাতের আলু চাষ করে লাভবান হয়েছে।
একই এলাকার হাড়িবেচা পাড়া কবির হোসেন জানান, দেড় বিঘা জমির আগাম আলু উত্তোলন করেছেন। এ সময় কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আমি ১৫ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এরমধ্য ৪ বিঘায় লাগানো
ছিল আগাম জাতের আলু। ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতে আলু লাগানোর পর ৬১ দিনের মাথায় আলু তুললাম। ৪ বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ বস্তা আলু হবে। শেষ পর্যন্ত বাজারে নতুন আলুর ভাল দাম পেলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াতে
পারবো।অপর কৃষক কালাম হোসেন জানান, ৩ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি ভালো দামের আশায়। তবে অতি বৃষ্টি হলেও জমিরমান উঁচু শ্রেনীর হওয়ায় আশ্বিন, কার্তিক মাসের বৃষ্টি তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
এখন সেই জমির আলু তুলছি। যা বিঘায় (৫০ কেজির বস্তা) ১০ থেকে ১২ বস্তা হতে পারে। আশা করি, এতে খরচ বাদে দ্বিগুণ টাকা লাভ হবে। এরপরেও আগাম আলু চাষ করে বাজারে ভাল দাম পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ আলু চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক।
আর সপ্তাহখানেক পর কিশোরগঞ্জে ৯টি ইউনিয়নে শতভাগ আলু উত্তোলন শুরু হবে। তবে বাজার দর ঠিক থাকলে আলু চাষিরা লাভবান হবেন। আলু উত্তোলনের পর ওই জমিতে সাইটা জাতের (নমলা) আলুসহ সাথী ফসল হিসেবে গম, ভুট্রা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচামরিচ ও শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করা যায়।
এতে কৃষক বিনা সারে পরবর্তী ফসল ফলাতে পারেন। নীলফামারীর বিভিন্ন বাজারে নতুন আলু আসছে, জেলা সদরের কচুকাটা, সোনারায় বাবড়িঝাড়, কিশোরীগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী,
উত্তর দুরাকুটি ও নিতাই ইউনিয়ন হতে। নীলফামারী কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, এবার জেলায় আগামজাতের আলু আবাদ হয়েছে দশ হাজার হেক্টর জমিতে। ওই জমির আগাম আলু তুলে সেখানে আবার আলু চাষ করবে কৃষক।
এবার জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। এরপর মধ্যে আগামজাতের আলু চাষ হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর। নতুহ আলু হওয়ার ভালোই দাম পাচ্ছে কৃষকেরা। কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, চলতি বছর ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে।
কৃষকরা ভাল দাম পেলে আগামীতে আগাম আলু চাষে উৎসাহিত হবেন। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।