মাটির ঘর এখন শুধুই স্মৃতি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরীবের রাজপ্রাসাদ মাটির ঘর। মাটিরঘর এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে অতি সুশীতল শান্তির নীড়। ঠান্ডা গরম সব…
মাটির ঘর এখন শুধুই স্মৃতি
মাটির ঘর এখন শুধুই স্মৃতি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরীবের রাজপ্রাসাদ মাটির ঘর।
মাটিরঘর এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে অতি সুশীতল শান্তির নীড়।
ঠান্ডা গরম সব রকমের ঋতুমাখা এ অঞ্চলের গরীবের জন্য আরামদায়ক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এসি ঘর নামেও পরিচিত ছিলো এই মাটির ঘর।
মাটির দেয়ালে তৈরি করা এসব ঘরকে কেউ বলত শান্তির নীর আবার কেউ বলত গরীবের রাজপ্রাসাদ।
কিন্তু কালের বিবর্তনে দিনের পর দিন এ উপজেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির ঘর।
সরেজমিনে দেখা যায়,
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছে মাটির ঘর এক সময় ঐতিহ্যের প্রতীক ছিল।
স্থানীয় গ্রামের ভিত্তবান লোকেরা এক সময় অনেক অর্থ ব্যয় করে মাটির ঘর নির্মাণ করতেন।
যা এখনো কিছু কিছু গ্রামে চোখে পড়ে। গ্রামের লোকজন নিজেরাই তৈরি করতেন ওই সব মাটির ঘর।
মাটির ঘর তৈরিতে প্রথমে এটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে ২-৩ ফুট চওড়া দেয়াল বা ব্যাট তৈরি করা হয়।
১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপড় খড় বা টিনের ছাউনি দেয়া হয় গ্রামীণ ঐতিহ্যের মাটির ঘরে।
গরীবের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এ ঘর তৈরিতে সম্প্রতি ঝোঁক কমছে মানুষের।
মাটির ঘরের বদলে তৈরি হচ্ছে ইট-সুরকির বিশাল অট্টালিকা।
বর্তমান সময়ে মাটির তৈরি ঘর নির্মাণে এখন আর মানুষের মাঝে তেমন আগ্রহ নেই।
এক সময়কার ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক মাটির ঘরের কদর এখন আধুনিক মানব সমাজে প্রয়োজন যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে।
বাহাগিলী ইউনিয়নের দক্ষিণ দুরাকুটি ঘোপাপাড়া গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, মাটির ঘর টিনের ঘর থেকে অনেক ভাল।
জন্ম হয়ে দেখেছি মাটির ঘর। মাটির ঘরে বসবাস না করলে কেউ বুঝবেনা এর স্বাদগন্ধ।
গরমের সময় ঠান্ডা ও শীতের সময় গরম লাগে মনে হয় এসি ঘরে বসবাস করছি।
বাহাগিলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউল রহমান শাহ দুলু বলেন, মাটির ঘর পরিবেশ বান্ধব।
মাটির ঘর সৌন্দর্য্য ঘেরা এবং আরামদায়ক হওয়ায় আমার কাছে ভাল লাগে।ঐতিহ্যের এসব নিদর্শন ধরে রাখা উচিৎ।
একই ধরনের নিউজ আরও পড়ুন #
কিশোরগঞ্জে বিলুপ্তির পথে বাবুই পাখির বাসা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে প্রান্তরে তাল গাছ কিংবা নারিকেল গাছ দেখলেই চোখে পড়তো বাবুইপাখির সুন্দর দৃষ্টিনন্দন বাসা।
তাল কিংবা নারিকেল গাছের পাতায় পাতায় হেলে দুলে দৃষ্টি আকর্ষন করছে শত শত বাসা। পাতা থেকে কিছুটা নিচে ঝুলে এসেই তৈরী হয় বাবুই পাখির নিপুন হাতে গড়া স্বর্ণকমল বিশিষ্ট কাঁচা বাসা।
বাবুই নামটি যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর তার শরিরের গঠন এবং সুন্দর তার নির্মান শৈল্পিক কারু কাজ।
তাল গাছ এখন আর সেদিনের মতো নেই। চিরচেনা এই ঐতিহ্যবাহী তাল গাছ বিলুপ্তের পথে আর সাথে সাথেই হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই ও বাবুই পাখির বাসা।
দেখতে মন্দ না হলেও একটু অলস, আরাম প্রিয় ও পরভোগী প্রকৃতির চড়–ই পাখি। এদের বসবাস পরের বাসাবাড়িতে, বিভিন্ন চিলেকোঠায়।
তাল গাছ আর বাবুই পাখির বাসা যেন একে অপরের সাথে কতো মিল। শুধু বাবুই আর চড়–ই পাখিই নয় কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর নাম জানা না জানা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মিষ্টি মধুর কলকাকলি আর প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যপট। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকরা প্রকৃতির নানান
রুপ নিয়ে লিখেছেন কত না গল্প কবিতা। আজ ফেলে আসা দিন গুলির সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মিলের গরমিল হয়েছে। বর্তমান ও
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আজ এই দৃষ্টি নন্দন মনোরম দৃশ্যগুলি কল্পনার মতো লাগে। পৃথিবীর বুকে প্রকৃতির এক অপরূপ সুন্দর মনোরম দৃষ্টিনন্দন বাবুই পাখির বাসা।
এমন দৃশ্য এমন প্রকৃতি হারিয়ে যাওয়ার আগেই প্রকৃতিতে প্রয়োজন তাল গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
হাজার হাজার বনাঞ্চল হাজার হাজার রকম গাছ থাকলেও বাবুই পাখির বাসস্থান ও জন্ম বৃদ্ধির জন্য তাল গাছই প্রথম পছন্দ।
কিন্তু এখন প্রশ্ন থেকে যায় বাবুই পাখি কেন তাল গাছে বাসা বাঁধে?
প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়,
বাবুই পাখির গুনের শেষ না থাকলেও রয়েছে প্রচন্ড রকমের ভয়। বিভিন্ন জন্তু, পোঁকামাকড়, শাপ,
বিচ্ছুর হাত থেকে নিজের জীবনকে বাঁচতে তারা তাল গাছের পাতায় কাটাকেই ঢাল হিসাবে বেছে নেয়।
পাতার আগার দিকে শেষ অংশ থেকে ঝুলে শুন্যের উপরে তৈরি করে মনোরম বাসা যা বাতাসে দুলতে থাকে।
প্রচন্ড ঝড় বাতাসে তাল গাছের বড় বড় পাতা গুলো বিভিন্ন ঝুকি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
তাছাড়া প্রকৃতিতে মনোরম দৃশ্যটি কেবল তাল গাছেই শোভা পায়, এমনি ভাবে গভির বুদ্ধিমত্তায় গড়ে উঠে বাবুই পাখির বাসা।
সে কারনেই প্রকৃতিতে তাল গাছ ও বাবুই পাখির বাসা খুবই প্রয়োজন।
সারা বাংলার সকল আপডেট খবর পেতে যুক্ত হোন আমাদের সাথে