প্রতারণার অভিযোগে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী (চেয়ারম্যান) শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ছিল রিমান্ডের প্রথম দিন। রিফান্ড,…
রিমান্ডে ‘রিফান্ড’ নিয়ে যা বললেন রাসেল
প্রতারণার অভিযোগে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী
(চেয়ারম্যান) শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ছিল রিমান্ডের প্রথম দিন।
রিফান্ড, রিফান্ড, রিফান্ড, রিফান্ড রিফান্ড রিফান্ড
এদিনের জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল দাবি করেছেন, তিনি কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি,
প্রতারণার প্রশ্নই ওঠে না। গ্রাহক জেনেবুঝেই ইভ্যালিতে পণ্য অর্ডার করেছে, যারা ডেলিভারি পায়নি ভবিষ্যতে
টাকা পেয়ে যাবে। এখানে প্রতারণার কোনো বিষয় ছিল না।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রিমান্ডে রাসেল দাবি করেছেন, ইভ্যালির প্রতিটি পণ্য
বিক্রির বিজ্ঞাপনের সঙ্গে পণ্য ডেলিভারির বিষয়ে শর্ত
দেওয়া ছিল। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল ‘স্টক থাকা পর্যন্ত’। অনেক সময় স্টক শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে
![](https://kishorganjeralo.com/wp-content/uploads/2021/09/ইভ্যালি-৪-1024x533.jpg)
পণ্য ডেলিভারি দিতে পারেননি। যাদের পণ্য
ডেলিভারি দিতে পারেননি তাদেরকে টাকা রিফান্ড (ফেরত) করেছেন। অনেকের রিফান্ড প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়াও প্রতিশ্রুত পণ্য সময়মত না দেওয়ার আরেক কারণ হিসেবে রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে জানান,
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি একটি নির্দেশনা দিয়েছে,
কোনো গ্রাহক পণ্য অর্ডার করলে তাকে ওই পণ্যের ১০
শতাংশ টাকা পরিশোধ করতে হয়। বাকি ৯০ শতাংশ
টাকা গ্রাহক পণ্য পাওয়ার পর প্রদান করবেন। আমরা
অনেকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়েছি, সাপ্লাইয়ারকে
অর্ডারের বিষয়ে জানিয়েছি। বেশ কয়েকজন
সাপ্লাইয়ার ইভ্যালিকে ফুল পেমেন্ট ছাড়া পণ্য দিতে
চায়নি। তাই ডেলিভারিগুলো আটকে গেছে। এছাড়াও
বেশ কয়েকজন সেলার (সাপ্লাইয়ার) বলেছেন
করোনাকালীন সময়ে অনেক পণ্যের ‘উৎপাদন বন্ধ
ছিল’, তাই তারা ইভ্যালিকে পণ্য দেয়নি। ফলে গ্রাহকদেরকে সব পণ্য ডেলিভারি দেওয়া যায়নি।
গ্রাহকদের টাকা আটকানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে
![](https://kishorganjeralo.com/wp-content/uploads/2021/09/ইভ্যালি-২-1024x533.jpg)
রাসেলের দাবি, জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মোট তিন লাখ
অর্ডার ডেলিভারি করেছে ইভ্যালি। যাদেরকে পণ্য দেয়া
যায়নি তাদের টাকা রিফান্ড করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন
ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা (১০% অ্যাডভান্স) এবং ইভ্যালিতে কেনাকাটায় একের পর
এক ব্যাংক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ইভ্যালির
নগদ জমার পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে রিফান্ড প্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে যায়।
এদিকে, ঢাকা পোস্টকে পুলিশ জানিয়েছে, ক্রেতা
ছাড়াও ইভ্যালির কাছ থেকে অনেক বিক্রেতাপ্রতিষ্ঠান
মোটা অংকের টাকা পায়। গত তিন দিনে পুলিশের
কাছে কমপক্ষে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা তাদের
পাওনার বিষয়ে জানিয়েছেন। ক্রেতাদের মতো বিক্রেতারাও পাওনা নিয়ে শঙ্কিত। শিগগিরই পুলিশ
সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওনার হিসাব লিখিত আকারে জমা নেবে।
তদন্ত সূত্র জানায়, ইভ্যালির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ
ও অপারেশনাল পদে রাসেলের স্ত্রী (চেয়ারম্যান)
শামীমা নাসরিনের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা ছিলেন।
তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (টেকনিক্যাল) শামীমার বোনের স্বামী মামুনুর রশীদ,
মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান শামীমার বোন সাবরিনা নাসরিন, পরিচালক (পারচেজ অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট)
শামীমার বন্ধু আতিকুর রহমান। এছাড়াও শামীমার দুই
ভাগ্নে জাহেদ ও জুবায়ের মোটরসাইকেল বিক্রি
সংক্রান্ত ডেলিভারির বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতেন।
তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
ইভ্যালির অফিসে অভিযান পরিচালনা করেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি যাচাই-বাছাই করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও
গুলশান থানার এসআই ওহিদুল ইসলাম বলেন,
‘আত্মসাৎ ও প্রতারণা নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।
আমরা তদন্তের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা করছি যে
রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন কি না।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক বিচার বিশ্লেষণ করেই একটা
মামলা হয়। এখন অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে আমরা আত্মসাতের বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
আর টাকাগুলো যদি আত্মসাৎ করা হয়, তাহলে সেই
টাকা এখন কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা করছি।
তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ইউনিট ইভ্যালির
কার্যক্রম নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। ওই বাহিনীর
একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘এতদিন ইভ্যালির
বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত করায় আমরা তদন্ত
করিনি। তবে আমরা ইভ্যালির অর্থ পাচারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। অর্থ পাচারের কোনো প্রমাণ
পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে
মামলা করা হবে। এখনও পর্যন্ত ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাচারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।’
ওই ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাসেল ও
ইভ্যালির ব্যাংক একাউন্টগুলো বেশ কিছু সময় জব্দ
করা হয়েছিল। এই সুযোগে তিনি হুন্ডি করে টাকা
পাচার করেছেন কি না সে-বিষয়েও যাচাই-বাছাই করা
হচ্ছে। সুমন ও আব্দুল মান্নান নামে মতিঝিলের দুজন
ডলার ব্যবসায়ীর সঙ্গে রাসেলের যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেছে। তাদের মাধ্যমে রাসেলের টাকা হুন্ডির
কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না এ বিষয়ে ওই দুই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
উল্লেখ্য, আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি ১৬ সেপ্টেম্বর
ভোরে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন। পণ্যের জন্য আগাম অর্থ
দিয়ে তা না পাওয়ার পাশাপাশি ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ করা হয় মামলায়।
মামলার বাদী আরিফ বাকের তার অভিযোগে উল্লেখ
করেছেন, ইভ্যালির বিজ্ঞাপন দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি
৩ লাখ ১০ হাজার টাকার পণ্যের অর্ডার দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তাকে কোনো পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।
ওই মামলা হওয়ার পর ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে র্যাব। রাতে র্যাব সদরদফতরে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন হস্তান্তর করা হয় গুলশান থানায়।
আরো পড়ুন,
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ফাইজার টিকা দেওয়া হবে। আমরা খুব দ্রুতই এই টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে দেব। করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে এবং শিল্পকারখানা সচল রয়েছে বলে অর্থনৈতিক চাকা সচল আছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়নকল্পে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে ১০ কোটি টিকার চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৮টি দেশকে লাল তালিকাভুক্ত করেছিল। তবে সেখান থেকে আমাদের দেশের নাম এখন সেই লাল তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত আমরা আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দিয়েছি। করোনা নিয়ন্ত্রণে নাই বলে সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা হারিয়েছেন এবং থাইল্যান্ডের সরকারপ্রধানের অবস্থা সূচনীয়।
এ সময় পৌর মেয়র মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে, জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু ও সাধারণ সম্পাদক অতিন্দ্র চক্রবর্তী বিপ্লবসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অনান্য সকল খবর পড়ুন এখানে
আরো পড়ুন,
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের মেসার্স জুবলী ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হোসাইন হায়দার আলী। ঋণ নেওয়ার পর সেই টাকা পরিশোধ না করেই ২০১২ সালে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তৈরি করেন বিলাসবহুল বাড়ি। সেখানেই পরিবার নিয়ে আয়েশে ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, হোসাইন হায়দার আলীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে কোতোয়ালি থানায় ১০টি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল হয়েছে। হোসাইন হায়দার আলী চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার লাভ লেইন আবেদীন কলোনি এলাকার মৃত হায়দার আলী জিওয়ানীর ছেলে।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, হোসাইন হায়দার আলী যমুনা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপন চলে যান। ঋণ পরিশোধ না করায় আদালতে বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১০টি মামলা করা হয়। ১০টি মামলার বিচার শেষে আদালত বিভিন্ন মামলায় তাকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আসামির বাড়ি এবং প্রতিষ্ঠান কোতোয়ালি থানা এলাকায় হওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা কোতোয়ালি থানায় আসে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে তিনি চট্টগ্রামে ছিলেন না। তিনি পরিবার নিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। একপর্যায়ে আমরা তার অবস্থান ঢাকার ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শনাক্ত করি। এরপর অভিযান চালিয়ে তাকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসি।
ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি জানান, ঋণের টাকা আত্মসাতের পর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বসবাস করছিলেন তিনি। সাজা ভোগ না করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিলেন তিনি। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণের টাকা দিয়ে ঢাকায় একটি অভিজাত বাড়ি তৈরি করেন। ওই বাড়িতেই পরিবারসহ বসবাস করতেন হোসাইন হায়দার। আজ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সারা বাংলার সকল আপডেট খবর পেতে যুক্ত হোন আমাদের সাথে