সাজেশন : ৪৫তম বিসিএস

৪৫তম বিসিএসে নতুন? প্রিপারেশন…


আপনারা যারা ৪৫ তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি মূলত তাদের জন্য লিখা। তবে এর বাহিরে যারা চাকরীর পরীক্ষায় প্রথমবারের মতন এটেন্ড করতে যাচ্ছেন তারাও পুরো লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। As a beginner আপনার অনেক কাজে দিবে এটি।

 

১. আপনাদের হাতে সময় আছে সম্ভাব্য ৮ মাস (মে, ২০২৩ এ পরীক্ষা হওয়ার পসিবিলিটি বেশি), দেখতে বেশ লম্বা সময় হলেও চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই দেখবেন ২০২২ সাল চলে গেছে আর তখন পরের বছরটার শুরুতে সব এলোমেলো লাগবে তাই যদি সম্ভব হয় এখন থেকে গুছিয়ে নিন। যেহেতু বেশ বড় একটা সময় হাতে আছে, সুতরাং আমি আপনাদের একটু ডিটেইল প্রিপারেশন নিতে পরামর্শ দিব। এই প্রিপারেশনটা হবে ভবিষ্যতের সব পরীক্ষার জন্য আপনার বেসিক। যদি এই সময়টা কাজে লাগান, দ্রুত সুফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।

২. যারা রুটিন করে পড়তে পারেন তারা সেভাবেই পড়ুন। আর যারা নিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনা করতে পারেন না তারা নিয়মে চলে আসুন। এখন থেকে রুটিন করে নিয়মিত কয়েক ঘন্টা পড়ুন। অনেকে পরামর্শ করে থাকেন যারা অপেক্ষাকৃত ভালো স্টুডেন্ট তারা দৈনিক ৬/৭ ঘন্টা আর যারা একটু দূর্বল তারা ১০/১২ ঘন্টা পড়াশোনা করুন। এক্ষেত্রে আমি বলবো আপনি ভাল স্টুডেন্ট না খারাপ স্টুডেন্ট সেটা দেখার দরকার নেই। আপনি রোজ ১০ ঘন্টা করে পড়ুন। আর হ্যা, অবশ্যই নিয়ম করে রোজ পড়তে বসবেন। এতে আপনার দারুণ একটা ফ্লো চলে আসবে একসময়।

৩. ভোকাবুলারির কোনো বিকল্প নাই। আপনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই জব করতে চান আপনার ভোকাবুলারি বেস স্ট্রং হতে হবে। সেজন্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫টি নতুন শব্দ শিখুন। ৫-৬ মাসে ৮০০+ শব্দ শিখে ফেলতে পারবেন। প্রিলি পরীক্ষায় এটি কম কাজে আসলেও রিটেন অংশে এটি আপনাকে দারুণভাবে এগিয়ে দিবে। (30 Marks Word related + Translation + Retranslation পেয়ে যাবেন)।

নোট : প্রতি সপ্তাহে একবার রিভাইজ দেবেন শব্দগুলো। নয়তো ভুলে যাবেন। (পারলে রাতে শোয়ার আগে প্রতিদিনের সাথে আগের রাতেরগুলো পড়ে ফেলুন)।

৪. ইংরেজি সাহিত্য অংশটা অনেকটা মুখস্ত টাইপ, তাই আপনি যদি গ্রামারে খুব দুর্বল হন, গ্রামারে উন্নতি করার পাশাপাশি সাহিত্য অংশে জোর দিন, ভালো স্কোর আসবে। তবে, আমার কাছে মনে হয়, লিটারেচার অংশ বরাবর কঠিন মনে হয় ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের বাহিরের স্টুডেন্টদের কাছে। আর লিটারেচার একটা হিউজ অংশ হওয়ার সবকিছু কাভার করা যায় না আবার ভাল প্রিপারেশন থেকেও অনেকসময় ভাল পরীক্ষা হয় না। তবে, হাতে যেহেতু অনেক সময় একটু একটু করে ইংরেজি সাহিত্য বুঝে নিয়ে পড়লে অনেকদিন আয়ত্ত্বে থাকবে।

৫. গণিত সিলেবাস দেখে দেখে অধ্যায়গুলো শেষ করে ফেলুন, চাইলে লিখে লিখে ডিটেইলসে সলভ করতে পারেন, এই অভ্যাসটা পরে কাজে দেবে। ইদানীং সিলেবাসের বাইরে থেকে দু একটা প্রশ্ন আসছে, যেমন— Complex Number, Function ইত্যাদি। যেহেতু আপনাদের হাতে সময় আছে, সেগুলোও পড়ে ফেলতে পারেন। গণিতে অপেক্ষাকৃত দূর্বল হলে কোনো স্যারের কোর্স বা কোচিং এ ক্লাস করতে পারেন (অথবা ইউটিউব থেকে কোনো একটা প্লেলিস্ট ফলো করুন)।

৬. নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি জব সলুশনের মোটা বইটার ২০১০-২০২২ অংশ পড়ে ফেলবেন, গণিত অংশটা বাদ দিয়ে (গণিতসহ করলে অনেক সময় নষ্ট হবে) তিনমাসের মতো সময় লাগবে। এটা জরুরী না, কিন্তু এই কাজটা করলে আপনার কাছে অনেক কিছুই সহজ লাগবে। আপনি ধরতে পারবেন কোন টপিকটা থেকে প্রশ্ন আসতে পারে, কোন টপিক একেবারেই প্রয়োজন নেই ইত্যাদি। যেহেতু আপনার হাতে অনেকটা সময় আছে, আপনি এখন থেকেই জব সলুশন পড়ে ফেলতে পারেন। যে প্রশ্নগুলো আপনার অজানা কিংবা বারবার ভুল হয়, সেগুলো মার্ক করে রাখবেন। পরে জব সলুশন রিভাইজের সময় শুধু সেই মার্ক করা প্রশ্নগুলোই পড়বেন। অনেক সময় বাঁচবে।

স্বপ্ন যখন ৪৫তম বিসিএস

৭. এক সাথে সব সাব্জেক্ট পড়বেন না। ইংরেজি বা গণিত প্রতিদিন রেখে অন্য একটি বিষয় পড়বেন।কিছুদিন পর বোর লাগলে সাবজেক্ট বদলে ফেলবেন। যে সাবজেক্টগুলোয় নম্বর বেশি সেগুলোয় বেশি জোর দেবেন।

৮. এখন থেকে সংবিধানের ১ম তিন ভাগ ধীরে সুস্থে মুখস্ত করুন। এছাড়াও অন্যান্য ভাগগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ মনে রাখতে হবে। এটা ভাইভা অবধি কাজে লাগবে।

৯. কোথাও রেগুলার এক্সাম দিন। কোচিং হলে ভাল হয় তবে এ সময়ে অ্যাপ ভিত্তিক পরীক্ষাব্যবস্থা জনপ্রিয় হচ্ছে, এগুলোতে এক্সাম দিয়ে নিজের অবস্থান যাচাই করুন। আপনি সর্বোচ্চ প্রিপারেশন নিয়েও অনেকসময় দেখা যায় শুধুমাত্র এক্সাম না দেবার কারণে মূল এক্সামে খারাপ করতে পারেন। এখন থেকে সামান্য প্রিপারেশনেই নেগেটিভ কম দাগানো, সব দাগানোর মানসিকতা এগুলো প্রাকটিস করুন।

১০. বাংলা + ইংরেজি + বাংলাদেশ এই তিন বিষয়ে ১০০ নম্বর, তাই এই ১০০ নম্বরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। বাংলাদেশে রিপিট প্রশ্নের হার বেশ ভালোই, তাই পুরোনো বিসিএসগুলোর বাংলাদেশ অংশের সলভ মুখস্ত রাখবেন একেবারে, পুরনো তথ্য আপডেট করবেন বিভিন্ন সাম্প্রতিক প্রশ্নের। তাছাড়া সময়ের সাথে কিছু প্রশ্ন প্রাসঙ্গিকতা হারায়, যেমন— সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী, ৫ম আদমশুমারি, পুরোনো বছরগুলোর সমীক্ষা ইত্যাদি। এগুলো খেয়াল করবেন। এছাড়া সরকারের নতুন অবকাঠামো, উন্নয়ন প্রজেক্ট এবং বিশ্বকেন্দ্রিক আলোচিত ইস্যুগুলো জেনে রাখতে নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আজ এ পর্যন্তই। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই প্রয়োজন ভেদে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করব৷


আরো দেখুন :

রচনা : বাংলাদেশের পোশাক শিল্প
রচনা : পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
রচনা : আইসিটি ও বাংলাদেশ
রচনা : কৃষিকাজে বিজ্ঞান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top