মারুফ হোসেন লিয়ন,সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ রংপুর নীলফামারীর প্রাণ কেন্দ্র সৈয়দপুর উপজেলা।উত্তরাঞ্চলের তিনটি জনপদে দ্রুত গতিতে এগুচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপ-লাইনের কাজ। সূত্রে জানা যায়,বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের অবহেলিত…
সৈয়দপুরে দ্রুত এগিয়ে চলছে গ্যাস পাইপ লাইনের কাজ
মারুফ হোসেন লিয়ন,সৈয়দপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুর নীলফামারীর প্রাণ কেন্দ্র সৈয়দপুর উপজেলা।উত্তরাঞ্চলের তিনটি জনপদে দ্রুত গতিতে এগুচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপ-লাইনের কাজ। সূত্রে জানা যায়,বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের অবহেলিত মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর সফর কালে পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া গেলে রংপুর তথা দেশের উত্তর জনপদে গ্যাস-লাইন সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এই প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে দ্রুত গতিতে এগুচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
সূত্রে জানায়,পেট্রোবাংলার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে(জিটিসিএল)বগুড়া ও রংপুর বিভাগে পাইপ-লাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সম্প্রসারণ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পটি বিদ্যুৎ , জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় এর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন পেট্রোবাংলার কোম্পানি গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড (জিটিসিএল) কর্তৃক বাস্তবায়িত হচ্ছে।৩০ ইঞ্চি ব্যসের ১৫০ কিঃমিঃ পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পটি বগুড়া হতে শুরু করে রংপুর হয়ে সৈয়দপুরে শেষ হবে।
প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মালামাল জয় পূর্বক মাঠ পর্যায়ে পাইপলাইন ও আনুসঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।নদীর তলদেশ দিয়ে পাইপলাইন নির্মাণ কাজ অতিদ্রুত শুরু হবে।ইহা ছাড়াও পীরগঞ্জে ২০ এমএমএসসিএফডি টাউন বর্ডার স্টেশন(টিবিএস)রংপুরে ৫০ এমএমএসসিএফডি টিবিএস এবং সৈয়দপুরে ১০০ এমএমএসসিএফডি সম্পন্ন সিটি গেইট
স্টেশন(সিজিএস)স্থাপন করা হবে।প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ ও সুবিধাভোগীদের ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে।বিগত ২ বছরে করোনা মহামারীর কারণে ভূমি মালিকগণের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব , সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সর্বাত্বক সহযোগিতায় প্রকল্পের কাজ মাঠ পর্যায়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের উত্তর জনপদে ১১ টি জেলায় ৫০০ এমএমএসসিএফডি হারে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ফলে বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটানো এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নিমিত্তে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যিকসহ অন্যান্য সকল শ্রেণীর গ্রাহককে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের আওতায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক খোন্দকার আরিফুল ইসলাম সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হলেও কাজ দ্রুততার সঙ্গে চলছে।অবশিষ্ট কাজ চলমান রয়েছে।কাজের গুনগত মান বজায় রেখে ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬০ শতাংশ।সবকিছু ঠিক থাকলে প্রকল্পটি জুন ২০২৩ নাগাদ শেষ হবে বলে প্রকল্পের সকলে আশা
করছেন।তবে মাঠ পযার্য়ে ১৫০ কিঃ মিঃ পাইপ-লাইন নির্মাণ কাজের মধ্যে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার ৪ কিঃমিঃ পাইপ-লাইন নির্মাণ এ কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দীপক গ্যাস-টেকনিক জেভি জানান।এই পাইপ লাইন চালু হলে সৈয়দপুর – রংপুর অঞ্চলে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন , শিল্পায়ন তথা ব্যবসা – বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে।
রংপুর এবং নীলফামারী ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এই এলাকার মানুষ প্রাকৃতিক গ্যাস প্রাপ্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। বর্তমানে রংপুর,সৈয়দপুর ও উত্তরা ইপিজেডে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো
কাঠ,কেরোসিন,ডিজেল ও ফারনেস ওয়েল ইত্যাদি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। রংপুর ও সৈয়দপুরে ছোট-বড় অনেক শিল্প কারখানা রয়েছে। এছাড়াও উত্তরা ইপিজেড ২৭ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান সচল রয়েছে।সারা দেশের সঙ্গে এই অঞ্চলের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় উদ্যোক্তাদের মাঝে রংপুর,সৈয়দপুর ও নীলফামারীতে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে অভিমত গবেষকদের। এছাড়াও সৈয়দপুরের ঢেলাপীর সংলগ্ন প্রস্তাবিত নীলফামারী অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়িত হলে,এই এলাকায় গ্যাসের চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি গড়ে উঠবে মানুষের নতুন নুতন কর্মসংস্থান।আশা করছেন এই অঞ্চলের সচেতন নাগরিক সমাজ-সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।